মুজাহিদুল ইসলাম, ঔষধ ও স্বাস্থ্য পরামর্শকঃ
প্রায় ১ শতাব্দি আগে স্প্যানিশ ফ্লু এর ভয়াবহতা দেখেছে বিশ্ব। এরপর শুরু হয় করোনা ভাইরাস। এতে প্রায় ৭০ লক্ষ লোক মারা যায় বিশ্বজুড়ে। এবার নতুন করে প্রভাব বিস্তাব করা শুরু করেছে আরেকটি ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন “ভাইরাস-এক্স” । এটি সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাসের মাধ্যমে ছড়ায়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যমতে, “এটি করোনার চেয়েও ২০ গুণ বেশি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী করতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এ রোগে ভাইরাসে আনুমানিক ৫ কোটি লোকের মৃত্যু হবে।”
ব্রিটেনের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের সাবেক প্রধাণ কেট বিংহাম বলেন, “প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যত লোক মারা যায়, এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা তার দ্বিগুণ হতে পারে। তাই সবাইকে এখনই প্রস্ততি নেয়ার আহ্বান নিতে পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি টিকা নিয়ে যাতে আগের মত সময় না নিয়ে দ্রুত গণটিকা কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানান তিনি।”
হাজার হাজার ভাইরাস প্রজাতির মধ্যে বিজ্ঞানীরা শুধুমাত্র ২৫টি ভাইরাস প্রজাতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই ভাইরাসগুলো যেকোনো মূহুর্তে নিজের রুপ বদল করে মহামারি সৃষ্টি করতে পারে।
করোনা সম্পর্কে কেট বিংহাম বলেন, “করোনায় আমরা ভাগ্যবান ছিলাম।” পাশাপাশি ডিজেজ এক্স সম্পর্কে তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, “এই ভাইরাস যদি ইবোলার মতো হয়, তাহলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। মৃত্যুর হার হতে পারে ৬০-৭০%।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্ততন্ত্র নষ্ট হওয়ায় শুরু হয়েছে ভাইরাস বিপর্যয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত মে মাসেই ভাইরাস সম্পর্কে তাদের ওয়েবসাইটে তথ্য দিয়েছে।
এক সতর্কবার্তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, “এটি করোনার চাইতেও অতি ভয়াবহ অতিমারি চালাতে পারে বিশ্বে। সংস্থাটির প্রধান ট্রেডস অ্যাডহানাম গেব্রেইসাস সতর্ক করে বলেছেন, “আরও ভয়ংকর কোনো ভাইরাসের আগমন হতে পারে, এজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তাদের সতর্কবার্তার পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে এ রোগের ভ্যাকসিন তৈরীর গবেষনা কার্যক্রম।
ইবোলা ভাইরাস চিহ্নিতকারী বিজ্ঞানীয় জিন জ্যাকাস মুয়েম্বি বলেন, “করোনার চেয়েও মারাত্নক সংক্রামক ভাইরাস ডিজেজ এক্স। এটি ছড়িয়ে পড়লে আরো একবার মহামারির মুখোমুখি হবে বিশ্ব।”
ধারণা করা হচ্ছে, ইবোলা ভাইরাসের জিনের গঠন বদলে , জেনেটিক মিউটেশনের কারণে এই নতুন ভাইরাস স্ট্রেইনের জন্ম হয়েছে।
ভাইরাসটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য এখনো জানা যায়নি বলেই একে ডিজেজ-এক্স নাম দেয়া হয়েছে। এক্স মানে হল অজানা। যেমনটি আমরা গণিতের সমস্যা সমাধানে অজানা রাশির জন্য এক্স ব্যবহার করি।
ভাইরাসটির প্যাথোজেনেসিস সম্পর্কে এখনো জানা না গেলেও, বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে টিকা তৈরীর কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন, আমিন।