মুজাহিদুল ইসলাম, ঔষধ ও স্বাস্থ্য পরামর্শকঃ
অতিমারীর ভয়াবহ স্মৃতি এখনো বিশ্ববাসীর মনে তরতাজা। অচিরেই আরো একটি ভয়াবহ বিপদ ছুটে আসছে মানবসভ্যতার দিকে? হ্যা, আপনি ভূল শুনছেন না। পুরো প্রতিবেদনটি পড়ার পর অজানা শংকায় আপনি নিজেও শিউরে উঠবেন। শিঘ্রই জেগে উঠতে পারে জম্বি ভাইরাস। মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন দাবিই করা হয়েছে।
২০২০। মৃত্যুপুরির ভয় দেখিয়েছিলো গোটা বিশ্বকে। কোটি কোটি মানুষ একটি ভাইরাসের কবলে পড়েছিলো। সেই দৃশ্য আর কখনো দেখতে চায় না মানব সভ্যতা। এখন যখন প্রায় সব স্বাভাবিক, দুনিয়া এগিয়ে চলেছে স্বাভাবিক নিয়মে, ঠিক তখনি নতুন এক ভাইরাসের খোঁজ দিলেন বিজ্ঞানীরা। নাম “জম্বি ভাইরাস”।
২০২২ সালে বরফ গলে যাওয়ায় সাইবেরিয়া থেকে বেশ কয়েক ধরণের জম্বি ভাইরাস পাওয়া গেছে। কিন্ত ফের এই ভাইরাস নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। এই ভাইরাসকে করোনার চেয়েও ভয়ংকর বলা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বহু হাজার বছরের পুরনো বরফের স্তর গলে যাওয়া মানুষের জন্য ভয়ংকর আশংকা সৃষ্টি করতে পারে। এমন কথা বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই বলছেন। তারা জানিয়েছেন, দুই ডজনেরও বেশি এমন ভাইরাস তারা খুঁজে পেয়েছেন। যেগুলো মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। আর এই তালিকায় রয়েছে এমন কয়েকটি ভাইরাস, যাদের নাম দেয়া হয়েছে “জম্বি ভাইরাস”।
বিজ্ঞানীরা আর্কটিক ও অন্যান্য অঞ্চলে বরফের নিচে চাপা পড়ে থাকা ভাইরাসদের সম্পর্কে আগেই সতর্ক করেছেন। তারা বলছেন, আর্কটিক পারমাফ্রস্ট হলে যাওয়ার কারণে জম্বি ভাইরাস মুক্ত হয়ে যেতে পারে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্যে একটি গুরুতর জরুরী অবস্থা শুরু হয়ে যেতে পারে।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে হিমায়িত বরফ গলতে শুরু হওয়ার পর থেকে হুমকি বেড়েছে। এই ভাইরাসের সাথে সম্পর্কিত ঝুুঁকিগুলো আরো ভালো ভাবে বুঝার জন্য একজন বিজ্ঞানী গতবছর সাইবেরিয়ান ফার্মাপস্ট থেকে নেয়া নমুনাগুলো থেকে তাদের কিছুকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। এই ভাইরাসগুলো হাজার হাজার বছর বরফের নিচে হিমায়িত অবস্থায় কাটিয়েছে।
এক্স মার্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিসিস্ট ক্লাভেরী বলেছেন, এই মূহুর্তে, মহামারী হুমকির বিশ্লেষনগুলি সেই রোগগুলির উপর ফোকাস করে যা দক্ষিন অঞ্চলে আবির্ভুত হতে পারে এবং তারপর উত্তরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিপরীতে একটি প্রাদুর্ভাবের দিকে খুব কম মনোযোগ দেয়া হয়েছে যা উদ্ভুত হতে পারে। সুদূর উত্তরে এবং তারপরে দক্ষিনে ভ্রমন করুন। সেখানে এমন ভাইরাস রয়েছে যা মানুষকে সংক্রমিত করার এবং একটি নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞানী মেরি ওন কুক এর সাথে একমত হয়েছেন। তিনি আরো যোগ করেছেন, আমরা জানিনা, পারমাফ্রস্টে কী ভাইরাস রয়েছে। তবে আমি মনে করি, একটি সত্যিকারের ঝূুঁকি রয়েছে। একটি রোগের প্রাদুর্ভাব-পোলিওর একটি প্রাচীন রুপের কথা। আমাদের ধরে নিতে হবে যে, এরকম কিছু ঘটতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে পারমাফ্রস্টে সমাহিত থাকা সত্ত্বেও জীবিত ভাইরাসগুলো এখনো এককোষী প্রাণীকে সংক্রমিত করতে পারে। প্রায় 50 হাজার পর আবারও জীবিত হচ্ছে জম্বি ভাইরাস। গত ১০ বছর ধরে এ বিষয়ে গবেষনা করছেন রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা।
হৃদের তলায় ঘুমিয়ে ছিলো এই জম্বি ভাইরাস। প্রতিকুল প্রাকৃতিক পরিবেশেও দিব্যি টিকে থাকতে পারে এই ভাইরাসটি। এর মারণ ক্ষমতা করোনার চেয়েও শতগুণ বেশি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।।