রাতে মহল্লায় যেমন পাহারাদার টহল দিতে থাকে, আমাদের শরীরেও তেমন অনেকগুলো টহলদার দিনে রাতে টহল দেয়, ক্ষতিকারক জীবাণু থেকে সুরক্ষা দিতে। আমরা যে প্রতিদিন অপরিষ্কার কত কিছু খাই, বাতাসে ভেসে বেড়ানো কত জীবাণু শরীরে ঢোকে তাও আমরা অসুস্থ হই না; এই পাহারাদারদের কল্যানে। এই টহলদাররা শরীরের জন্য ক্ষতিকর জিনিসগুলোকে ধরে পাকড়াও করে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। আমর কিছু টেরও পাইনা। এটাই হলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তবে এটা সবসময় নিখুঁতভাবে কাজ করেনা, মাঝে মাঝে ভুলও করে বসে। তখনি দেখা যায় এলার্জি। যেমন ধরেনি বৃষ্টির দিনে আসিফ ভাই জোড় আসন দিয়ে বসলো, ভুনা খিচুড়ি, মচমচে করে ভাজা পদ্মার ইলিশ আর একটু বেগুন ভাজি নিয়ে, আরাম করে খাবে। কিন্ত খাবার মুখে দেওয়ার একটু পরই দেখা গেল আসিফ ভাইয়ের শরীরে চাকা চাকা দাগ উঠে পড়েছে, প্রচুর চুলকানি হচ্ছে। কি মুশকিল!
আরাম করে খাওয়া তো গেলই না, আর এখন চুলকানিও থামছে না। তাহলে এখানে ঘটনাটা কি হলো? আসিফ ভাইয়ের শরীরে যে পাহারাদারগুলো আছে, যারা প্রতিদিন তাকে অনেক ধরণের শত্রু থেকে বাঁচায়, তারা খাবারের মধ্যে কোনো একটা উপকরণকে ক্ষতিকর মনে করেছে। ধরলাম, বেগুনকে ক্ষতিকর মনে করেছে। আর তাই বেগুনের সাথে বেদম মারামারি শুরু করে দিয়েছে। ভেতরে মারামারি শুরু হয়েছে আর বাইরে থেকে আসিফ ভাই দেখতে পাচ্ছেন, লাল বড় বড় চাকা, অনুভব করছেন চুলকানি। কিন্ত আসলে তো বেগুন আসিফ ভাইয়ের শরীরে তো কোনো ক্ষতি করবে না। উনি তো কোনো সমস্যা ছাড়াই মজা করে খেল। সহজ ভাষায় এটিই হলো এলার্জি। আপনার শরীরের জন্য যে জিনিস ক্ষতিকর না, কিন্ত আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদেরকে ক্ষতিকর হিসেবে চিনে রেখেছে, টহল দেয়ার সময় নাগাল পেলেই একেবারে একহাত দেখে নেয়, আর আপনি পড়েন মহা যন্ত্রনায়। সাধারণত এটা ভয়ের কিছু না। এমনিতেই চলে যায়। তবে অনেককে এটি অশান্তিতে রাখে। অল্প কিছু ক্ষেত্রে এলার্জি প্রাণঘাতি হতে পারে। এটা জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কমন এলার্জি থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে আলোচনা শেষে প্রাণঘাতি এলার্জি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।