প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় শনিবার পালন করা হয় প্রাথমিক চিকিৎসা দিবস বা ফার্স্ট এইড ডে।

ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলো তাৎক্ষণিক ত্বরিত ব্যবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কমিয়ে আনা। এ জন্য ফার্স্ট এইড বক্সের কিছু উপকরণের পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণও প্রয়োজন। আমাদের দেশে ফার্স্ট এইড বক্স পরিচিত হলেও প্রশিক্ষণ বা সেই জরুরি মুহূর্তে করণীয় বিষয়গুলো খুব একটা পরিচিত নয়। যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তা কখনো কখনো সুফল বয়ে আনে বা কারও জীবন রক্ষা করতে সহায়তা করে। কিন্তু প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে কারও ভালো জ্ঞান বা প্রশিক্ষণ থাকলে সে দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কোনো অসুস্থতা বা আঘাতের পর করণীয় ঠিক করতে পারে; যা জীবন রক্ষা করতে পারে। বাড়িতে একটি ফার্স্ট এইড বক্স থাকলে তা কাজেই লাগবে।

ফার্স্ট এইড বক্সে কী থাকে?

পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে ফার্স্ট এইড বক্স একটু ভিন্ন হতে পারে, তবে অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সব কটিতে প্রায় একই থাকে।

গজ ব্যান্ডেজ

খুবই দরকারি একটি উপকরণ। রোল আকারে পাওয়া যায়। যেকোনো মেডিসিনের দোকানেই পাওয়া যায়।

তুলা বা কটন

তুলা ছোট ও বড় প্যাকেট—দুভাবেই পাওয়া যায়। নিরাপত্তার জন্য প্যাকেট তুলাই ভালো।

ক্রেপ ব্যান্ডেজ

হাড় ফেটে গেলে বা কোথাও মচকে গেলে ক্রেপ ব্যান্ডেজ ব্যবহারে ব্যথা কমে, ফোলাও ক্রমে কমে আসে।

সার্জিক্যাল ব্যান্ডেজ

এসব দিয়ে সহজেই ক্ষতের ওপরে ব্যান্ডেজ আটকে রাখা যায়। তবে খুব ভালো ব্যান্ডেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয় না।

কাঁচি

ক্ষতের পাশে প্রয়োজনে পরনের কাপড় কাটা, গজ, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি কাটার জন্য কাঁচি দরকার।

চিমটা (ফরসেপ)

অনেক সময় ক্ষতে ক্ষুদ্র আঠালো ময়লা থাকে, যেগুলোকে তুলা দিয়ে মুছে ফেলা যায় না, আবার পানি দিয়েও পরিষ্কার হয় না। এ ক্ষেত্রে চিমটা কাজে আসতে পারে।

সেফটি পিন

ফার্স্ট এইড বক্সে এটিও ভালো উপকরণ, যাকে নানা কাজে ব্যবহার করা যায়।

সার্জিক্যাল গ্লাভস

পানি বা সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেওয়ার কোনো দরকার নেই; যদি থাকে ডিসপোজেবল গ্লাভস। ক্ষত ময়লা হাত দিয়ে পরিষ্কার করার চেয়ে এটা পরে করা নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত।

টর্চ

টর্চের ফার্স্ট এইড উপকরণ হিসেবে ব্যবহার বলে শেষ করা যাবে না। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।

জীবাণুনাশক বা অ্যান্টিসেপটিক

স্যাভলন বা ডেটল, হেক্সিসল—এমন নানা রকম অ্যান্টিসেপটিক বক্সে রাখতে পারেন। কিছু অ্যান্টিসেপটিক ক্রিমও পাওয়া যায়, যা অনেক উপকারী।

থার্মোমিটার

জ্বর এলে বা শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য এর বিকল্প নেই। খুব সহজেই এটি দিয়ে জ্বর মাপা যায়। ফার্স্ট এইড বক্সের অন্যতম উপাদান এটি।

ওষুধ

গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ, কিছু ব্যথানাশক ওষুধ, পেট খারাপের ওষুধ, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথার ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইন, বমি, জ্বরের ওষুধ ইত্যাদি বক্সে থাকলে বিশেষ মুহূর্তে খুবই কাজে লাগে। বার্ন ক্রিম, ব্যথানাশক মলম, অ্যালার্জির ওষুধও রাখা যায়।

পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট

এটিও বক্সে রাখা যেতে পারে।

পালস অক্সিমিটার

বর্তমানে এটি একটি জরুরি উপকরণ হয়ে পড়েছে। এই করোনা মহামারিতে কারও জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট হলে এটি দিয়ে সহজেই রক্তের অক্সিজেনের মাত্রা ও হৃৎস্পন্দনের মাত্রা জানা যায়।

রক্তচাপ মাপার যন্ত্র

বিশেষ মুহূর্তে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। একটু শিখে নিলে এটি দিয়ে সহজেই রক্তচাপ মাপা যায়। এখন ডিজিটাল যন্ত্র পাওয়া যায়, যা দিয়ে সহজেই রক্তচাপ মাপা যায়।

গ্লুকোমিটার

কারও রক্তের শর্করা কমে বা বেড়ে গিয়ে অচেতন হয়ে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকর একটি উপকরণ হতে পারে।