উপাদান:
মাইলোফেন ১০ মিগ্রা. ট্যাবলেট: প্রতিটি ফিল্ম কোটিড ট্যাবলেটে রয়েছে বেক্লোফেন বিপি ১০ মি.গ্রা.
বিবরণঃ
মাইলোফেন একটি এন্টিস্পাজমোটিক এজেন্ট। এটি কার্যকরীভাবে পেশী প্রসারিত করে যা স্পাইনে কাজ করে। এটি স্পাাইনে গাবা রিসেপ্টরকে স্টিমুলেট করে যা গ্লুকামেট ও এ্যাসপেরেট নিঃসরণে বাধা দেয়। এটা স্নায়ুতন্ত্রকে নিস্তেজ করে। মাইলোফেন নিউরোমাসকুলার ট্রান্সমিশনে কোন ভূমিকা রাখে না। এটা কোন না কোন ভাবে এ্যান্টিনোসিসেপটিভ হিসেবেও কাজ করে।
বর্ণনা:
মাইলোফেন কেন্দ্রীয়ভাবে কাজ করার মাধ্যমে স্ক্যালিটাল পেশিকে শিথিল করে এবং স্পাইনাল অংশে কাজ করার মাধ্যমে এন্টিস্পাসটিক কার্য সম্পাদক করে।
নির্দেশনা:

  1. কঙ্কাল তন্দ্রীয় পেশীর স্পাজম।
  2. পেশী সংকোচন।
  3. মালটিপল স্কেলেরোসিস,মেরুদন্ডের আঘাত ও মেরুদন্ডে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা।
  4. জনিত স্পাসটিসিটি।
  5. সেরেব্রা জনিত মাংসপেশীর সংকোচন বিশেষতঃ ইনফেন্টাইল সেরেব্রাল পালসী।
  6. ঘুমের সমস্যা, মুত্রথলির ও স্ফিংটারের কার্যক্ষমতা উন্নয়নে এবং ডেকুবিটাস আলসার।
  7. দুর্ঘটনাজনিত সেরেব্রোভাসকুলার সমস্যা বা নিওপাসটিক অথবা ব্রেইনের বিভিন্ন অসুখ।
  8. টেনশন টাইপ মাথা ব্যাথা।

মাত্রা ও সেবনবিধি:
প্রাপ্ত বয়স্ক:
স্বল্পমাত্রা দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা উচিত এবং সর্বোচ্চ কার্যকারিতা না পাওয়া পর্যন্ত ধীরে ধীরে মা্ত্রা বাড়াতে হবে। (স্বাভাবিকভাবে ৪০-৮০ মিগ্রা. দৈনিক)
প্রয়োজন অনুসারে মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে কিন্ত দৈনিক ৮০ মিগ্রা এর বেশি নয়।
শিশুদের ক্ষেত্রে:
সাধারণ গ্রহনমাত্রা দৈনিক ০.৭৫-২ মিগ্রা./কেজি করে বিভক্ত মাত্রায়।
অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেব্য।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো হল-ঘুমঘুম ভাব, বমি বমি ভাব, ঝিমুনি, অবসন্নতা, দ্বিধাগ্রস্থতা, ক্লান্তি, মাংসপেশীতে ব্যাথা ও নিম্ন রক্তচাপ।
স্নায়ুঃ মাথাব্যাথা, নিদ্রাহীনতা ও সামান্য উত্তেজনা, হতাশা, বিভ্রান্তি, পেশীর ব্যাথা, খিঁচুনী ইত্যাদি।
রক্ত সঞ্চালনঃ হাইপোটেনশন এবং খুব কম ক্ষেত্রে ঘন ঘন শ্বাস নেয়া, বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যাথা ও মুর্ছা যাওয়া।
পরিপাকতন্ত্রঃ ক্ষুদামন্দা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মুখের শুষ্কতা, স্বাদহীনতা, এ্যাবডোমিনাল ব্যাথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, মলে লুকানো রক্ত থাকা।
মুত্রথলিঃ বার বার প্রস্রাব ভাব হওয়া, মুত্র না বের হওয়া, যৌন সমস্যা, বীর্যপাত না হওয়া, রাতে বার বার প্রস্রাব হওয়া এবং প্রস্রাবে রক্ত হওয়া।
অন্যান্যঃ র্যাশ, চুলকানি, ফোলা, ওজন বৃদ্ধি, নাক বদ্ধতা, চোখে ঝাপসা দেখা, যকৃতের সমস্যা ইত্যাদি। পেশীর টান এমন হতে পারে যে হাঁটা চলায় সমস্যা হয় তখন মাত্রা পুনঃনির্ধারণ করা উচিত। এজন্য দিনের বেলায় কম মাত্রা দিয়ে রাত্রে বেশী মাত্রা দেয়া যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায়:
প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরি B.
গর্ভাবস্থায় মাইলোফেন সেবনের কোনো পর্যাপ্ত ও ভালো তথ্য পাওয়া যায়নি। যদি ভ্রুনের উপর ক্ষতিকর প্রভাবের চেয়ে এর প্রয়োজন অধিক হয়, তবেই ব্যবহার করা যেতে পারে।
স্তন্যদানকালে:মায়ের দুধে মাইলোফেন নিঃসৃত হয়। তাই দুগ্ধদানরত মায়েদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত।
শিশু: ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
প্রতিনির্দেশনা:
মাইলোফেন এর যেকোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত।
সতর্কতা:
বৃক্ক অকার্যকর রোগীদের এবং যারা দীর্ঘদিন হিমোডায়ালাইসিস নিচ্ছে তাদেরকে সতর্কতার সাথে দিনে ৫ মিগ্রা. দেয়া উচিত।
যারা স্পাজম ছাড়াও অন্যান্য মানসিক সমস্যা, পাগলামি, হতাশা,অস্থিরতায় ভুগছে তাদেরকে সতর্কতার সাথে ঔষধটি দেয়া উচিত যেহেতু তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলির অবনতি হতে পারে। খিঁচুনীর রোগীদের ক্ষেত্রে মাইলোফেন এর সাথে পর্যাপ্ত খিঁচুনীর ঔষধ দিতে হবে এবং বিশেষ সতর্কতার সাথে অবস্থা পর্যবেক্ষন করতে হবে। মাইলোফেন দিয়ে চিকিৎসার পর খিঁচুনী হতে পারে, যা ধীরে ধীরে অবনতি হতে পারে। যাদের আলসার, সেরেব্রোভাসকুলার ডিজিজ, হেপাটিক বা রেনাল বা শ্বাসনালীর সমস্যা আছে, তাদেরকে সতর্কতার সাথে মাইলোফেন দিতে হবে। যাদের কার্ডিওপালমোনারী বা শ্বাসনালীর পেশীর দুর্বলতা রয়েছে তাদেরও সতর্কতার সাথে দিতে হবে। মাইলোফেন দিয়ে চিকিৎসার সময় স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার উন্নতি হতে পারে যা মুত্রথলির নিঃসরণ সহজ করে। তারপরও এটা সিফংটারে বেশি চাপ এবং হঠাৎ মুত্রথলিতে মুত্রাধিক্য ঘটাতে পারে। এসব ক্ষেত্রে মাইলোফেন সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। স্ট্রোকের রোগীদের ক্ষেত্রে মাইলোফেন খুব বেশি উপকারী নয়। এসব রোগীরা সাধারণত এই ঔষধে কম সহনীয় হয়। হেপাটিক ও ডায়াবেটিসের রোগীদের সঠিক ল্যাবরেটরী পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা উচিত যে, মাইলোফেন এসব রোগের অবনতি ঘটাচ্ছে না। মাইলোফেন গ্যাস্ট্রিক এসিডের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয় বলে পেপটিক আলসারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও মানসিক বিকারগ্রস্থ বা মৃগী বা খিঁচুনী রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।
অন্য ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া:

  1. ট্রাইসাইক্লিক এন্টিডিপ্রেসেন্ট এর সাথে মাইলোফেন গ্রহন করলে দুর্বলতা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
  2. উচ্চ রক্তচাপ রোধী ঔষধের সাথে মাইলোফেন ব্যবহার করলে নিম্ন রক্তচাপের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।

সংরক্ষন:
আলো থেকে দুরে, ঠান্ডা এবং শুষ্ক স্থানে সংরক্ষন করুন। সকল ঔষধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
সরবরাহ:
মাইলোফেন ১০ মিগ্রাঃ প্রতিটি বক্সে রয়েছে ৩/১০ টি ট্যাবলেট, অ্যালু-পিভিডিসি ব্লিস্টার প্যাকে।