যারা আজ তোমাদের সাথে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষনীয় বিষয় শিখতে চলেছে। সুতরাং মনের সব দরজা খুলে দাও আর মনোযোগ দিয়ে শুনো। এসো আলাপ করি, পিংকির সাথে।
আজ ৯ বছর পূর্ণ করে ১০ বছরে পা দিবে সে। ওর বান্ধবী জিয়া, মিরা আর ওর দিদি প্রিয়া, যে একজন ডাক্তার। আজ ও বাড়িতে ওর জন্মদিন উদযাপন করছে। হঠাৎ মিরার চোখে পড়লো দেয়ালে টাঙ্গানো প্রিয়ার ছোটবেলার ছবিগুলো আর বলে উঠলো-
মিরাঃ আরে প্রিয়া দিদি, তুমি তো ছোটবেলায় একদম পিংকির মতো দেখতে ছিলে।
প্রিয়াঃ হেসে দিয়ে। একদম ঠিক বলেছো মিরা। ছোট মেয়ে থেকে যুবতী হয়ে ওঠা কিন্ত বেশ মজার অভিজ্ঞতা।
মিরাঃ তাই? আচ্ছা দিদি, আমরা বড় হই ঠিক কিভাবে?
প্রিয়াঃ মিরা, আমরা বড় হই ঠিক পিটুইটারী গ্রন্থির কারণে।
মিরাঃ পিটুইটারী গ্রন্থি? সেটা কি?
প্রিয়াঃ পিটুইটারী গ্রন্থি তোমার ব্রেইণের নিচে থাকে। অনেকটা মটরশুঁটির মতো দেখতে। যখন তোমার বড় হওয়ার সময় হয়, তখন তোমার শরীরে হরমোন নামক কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়। এই হরমোনের ফলেই তোমার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকশিত হয়। যে কারণে তোমার শারীরিক এবং মানসিক নানা পরিবর্তন দেখা যায়।
মিরাঃ কি ধরণের পরিবর্তন দিদি?
প্রিয়াঃ নানান রকম পরিবর্তন। যেমন ধরো, তোমার উচ্চতা বাড়ে, তার সাথে ওজন। তোমার বুকের স্তনের বিকাশ হয়। তোমার নিতম্ব চওড়া হয়। আর হ্যাঁ, বগলে এবং জননাঙ্গের চারপাশে লোম গজানো শুরু হয়। এই পরিবর্তেনের পাশাপাশি কখনো কখনো তুমি হয়তো তোমার যৌনি থেকে কিছু কিছু সাদা ও স্বচ্ছ তরল পদার্থ বের হতে দেখবে। একে যৌনি স্রাব বলে। এটি একেবারেই স্বাভাবিক। এতে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
পিংকিঃ দিদি, যৌনি মানে আমরা যেখান দিয়ে প্রস্রাব করি, তাইতো?
প্রিয়াঃ না, পিংকি। যৌনি একদম আলাদা। একটু বিস্তারিত বোঝাই। আমাদের ২ পায়ের মাঝে ৩ টি ছিদ্র থাকে। সবচেয়ে উপরের ছিদ্রটিকে বলে মুত্রনালী; যা দিয়ে আমরা মুত্র ত্যাগ করি। এর নিচে হলো যোনি। এই ছিদ্রটি মুত্রনালীর চেয়ে সামান্য বড়। জন্মানোর সময় শিশু যোনি দিয়েই বেরিয়ে আসে। আর শেষেরটি হলো মলদ্বার। এই ছিদ্র দিয়ে আমরা মলত্যাগ করি।
জিয়াঃ দিদি, মেয়েদের মতো ছেলেদেরও বড় হওয়ার সময় পরিবর্তন হয়, তাইনা?
প্রিয়াঃ অবশ্যই হয়, জিয়া। ছেলেদের উচ্চতা দ্রুত বাড়তে থাকে। বুকে আর যৌনাঙ্গের আশেপাশে লোম গজানো শুরু হয়। গলার স্বর ভারী হতে থাকে আর মুখে লোম-দাড়ি গজাতে থাকে। ছেলে বা মেয়ে উভয়েই বড় হওয়ার সময় নানাবিধ শারীরিক পরিবর্তন হয়।
পিংকিঃ আচ্ছা এবার বুঝলাম, আমরা কিভাবে বড় হই।
প্রিয়াঃ খুব ভালো কথা। আচ্ছা এবার বলোতো সুস্থভাবে বড় হওয়ার জন্য আমাদের শরীরে কি কি প্রয়োজন?
পিংকিঃ দুধ আর সবুজ শাক-সবজি।
জিয়াঃ আর ফলমুল।
মিরাঃ ব্যায়াম করারও দরকার।
প্রিয়াঃ আরে বাহ। তোমাদের তো দারুন বুদ্ধি। একদম ঠিক বলেছো। সঠিকভাবে বড় হওয়ার জন্য আমাদের শরীরে বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান প্রয়োজন। রোজকার খাবারে বিভিন্ন রঙ্গিন ফল, সবজি আর খাদ্য শস্য রাখলে এ সমস্ত পুষ্টিকর উপাদান সহজেই পাওয়া যায়। একটি আবশ্যক পুষ্টিকর উপাদান হলো আয়রন। তোমরা কি জানো, শরীরে আয়রনের কি প্রয়োজন?
পিংকি+মিরা+জিয়াঃ কি? প্রয়োজন কি?
প্রিয়াঃ রক্তে অক্সিজেনের সরবরাহ করার জন্য আয়রণ আবশ্যক। শরীরে আয়রণের অভাব হলে এনিমিয়া হতে পারে। যাতে তোমার ঠিকঠাক ঘুম হলেও ক্লান্ত আর দুর্বল বোধ হবে।
পিংকিঃ কিন্ত দিদি, আয়রণ কোথা থেকে পাওয়া যায়?
প্রিয়াঃ আয়রণ পাবে মটরশুটি, পালংশাক, আলু, ডাল, আখরোট, বাদাম, কাজু, কিসমিস আর মাছ থেকে। আর হ্যাঁ, আয়রণযুক্ত খাবারের সাথে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেলে শরীরে আয়রণ বেশি মাত্রায় শোষিত হয়। ভিটামিন-সি পাওয়া যায়, আমলকি, কমলা, লেবু আর আমের মত ফলে।
পিংকিঃ আরে বাহ। আমার তো আম প্রিয় ফল। দিদি, এত খাবারের কথা বললে যে আমার ক্ষিদে পেয়ে গেলো।
প্রিয়াঃ ঠিক বলেছো পিংকি। চলো গরম গরম খেয়ে নেয়া যাক।
চলবে…..
