মুজাহিদুল ইসলাম, ঔষধ ও স্বাস্থ্য পরামর্শকঃ
জনসংখ্যা নীতিতে বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে অবস্থান বদলেছে। তাই আবারো পুরনো স্লোগান দিচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। তারা বলছে, “ছেলে হোক মেয়ে হোক, একটি সন্তানই যথেষ্ট।” এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্লোগান ছিলো, “দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়।” স্লোগান যাই হোক, পরিবার পরিকল্পনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আজ আমরা পরিবার পরিকল্পনা ও জন্ম নিয়ন্ত্রনের বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো।
পরিবার পরিকল্পনাঃ কোনো পরিবারের দম্পত্তি দুটির অধিক সন্তান চান, আবার কোনো দম্পতি মনে করেন, একটি সন্তানই যথেষ্ট। বেশিরভাগ দম্পতির সন্তান নিতে তেমন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় না। আবার কারো সন্তান নেয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। আবার অনেক দম্পতি এমনও আছেন যাদের বাচ্চা না হলেও তারা সুখী। তাই প্রত্যেক পরিবার এবং তাদের চিন্তাভাবনা আলাদা। তাই প্রত্যেক পরিবারই পারফেক্ট, তাদের নিজেদের মতো করে। আর একথাটা যদি আমরা একবার মেনে নিই, তাহলে অন্যদের বাচ্চা নাও, বাচ্চা নাও করে বিব্রত করতে হবে না।
নারীদের কেন বন্ধ্যা বলা হয়ঃ কোনো নারীর যদি বাচ্চা না হয়, তার মানে এই নয় যে, সমস্যা কেবল নারীদের। পরিসংখ্যান বলছে, বন্ধ্যাত্বের জন্য শতকরা ৪০ ভাগ দায়ী নারীরা,৪০ ভাগ পুরুষ এবং ২০ ভাগ অন্যান্য কারণ। তাহলে বুঝতেই পারছেন, শুধু নারীই বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে ৫ কোটি দম্পতি নিঃসন্তান। তবে বর্তমানে তাদের সন্তান নেয়ার বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আছে। সবচেয়ে আগে চিকিৎসককে জানতে হবে সমস্যাটা কোথায়। চালুন আলোচনা করা যাক, কি কি পদ্ধতি আছে।
ইনসেমিনেশনঃ এ পদ্ধতিতে পুরুষের শুক্রানু নারীদের জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। যাতে কোনো বাধা বিপত্তি ছাড়াই তা নিষিক্ত হতে পারে। যদি পুরুষের শুক্রানু কম হয় বা একেবারেই উৎপন্ন হয়না, তাহলে স্পার্ম ডোনারের কাছ থেকে তা নেয়া যেতে পারে। কিছু দেশে সমকামী দম্পতিদের এভাবে সন্তান নেয়ার অধিকার আছে। পাশাপাশি অবিবাহিত নারীদেরও সন্তান নেয়ার অধিকার আছে।
ইন ভিট্রো পার্টিলাইজেশন (আই.ভি. এফ.): 1978 সালে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সারা বিশ্বের প্রায় আশি হাজার শিশু এ পদ্ধতিতে জন্মগ্রহণ করেছে। কখনো কখনো স্পার্মের ধরণ এ খারাপ হয় যে, ডিম্বানুতে পৌঁছানোর আগেই এর মৃত্যু হয়। এ ধরণের ব্যক্তির ক্ষেত্রে আইভিএফ খুবই কার্যকর।