আমাদের মধ্যে সাধারণভাবে একটা ধারণা প্রচলিত রয়েছে যে, কম বয়সে কখনোই হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে না, এটা বুড়োদের রোগ। কিন্ত এখন দিনকাল পাল্টানোর সাথে সাথে এসব চিন্তাধারার বদল এসেছে। আর সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেন্ডের দিকে একটু নজর দিলেই বুঝা যাবে, ইদানিং ৩০-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে হাইপারটেনশন বেশি দেখা যায়। এজন্য অতিরিক্ত লবণ সমৃদ্ধ জাঙ্কফুড খাওয়া, প্রোসেসড খাবার, ওবেসিটি, শারীরিক পরিশ্রমের অভাবের মতো সমস্যাগুলো মুলত দায়ী। আবার শিশু কিশোরদের মধ্যে বেশ কিছু লাইফস্টাইল ডিজেসের কারণেও হাইপারটেনশন হতে পারে। অল্পবয়সে অনেকেরই পারিবারিক কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়। তবে অন্য অনেক কিছুই এর জন্য দায়ী হতে পারে। যেসব রোগ থাকলে মুলত হাইপারটেনশন হতে পারে-পারিবারিকভাবে কারো যদি কিডনীর রোগ থাকে, কিডনীর ইনফ্লামেশন, কিডনীর গঠনগত ত্রুটি, কিডনীর রক্তনালীর সমস্যা, নেফ্রাইটিস, কিডনী টিউমার হলে রক্তচাপ অস্বাভাবিক রকমের বেশি থাকে। রক্তনালীর কোনো সমস্যা, বিশেষত তাতে সঙ্কোচন বা কোনো জন্মগত ত্রুটি কম বয়সে হাইপারটেনশনের কারণ হয়। কারো যদি হাইপার/হাইপো থায়রোডিজম থাকে কিংবা এড্রিনালীন বা পিটুইটারী গ্রন্থির সমস্যা থাকে, এককথায় হরমোন বা গ্রন্থি সম্পর্কিত সমস্যার শুরুই হয় হাইপারটেনশনের মতো উপসর্গ দিয়ে। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে টিউমার বা সেখানে কোনো জন্মগত ত্রুটি থাকলে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় মাদকদ্রব্য সেবন অথবা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ চললে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় রক্তচাপ বাড়ে। ভাস্কুলাইটিসের (রক্তনালীর ইনফ্লামেশন) মতো রোগের হাইপারটেনশন দেখা যায়।
কম বয়সে প্রায় কেউই রক্তচাপ মাপেন না। নিয়মিত ভিত্তিতে মাপানো তো ‍দুরের কথা। পরে হার্ট ফেইলিউর, স্ট্রোক বা কিডনীর সমস্যায় তা ধরা পড়ে। শিশুদের ক্ষেত্রে লালচে ইউরিন বা দৈনিক ইউরিনের পরিমান কমে যাওয়ার সমস্যা থাকলে সতর্ক হোন।